আইইডিসিআর
বর্তমানে কোভিড-১৯ রোগ এর বিস্তার বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ পরামর্শ দেয় যে, সন্দেহ হচ্ছে এমন সকল কোভিড-১৯ রোগীকে (যাদের শ্বাসতন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ রয়েছে) প্রথম সাক্ষাতেই গুরুত্ব অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে জরুরী ভিত্তিতে রোগের তীব্রতা অনুসারে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
এই মুহূর্তে কোভিড-১৯ এর কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।
চিকিৎসা প্রদানকালে অবশ্যই এ বিষয়ক জাতীয় নির্দেশিকা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
লক্ষণ ও উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে।
৮২% ক্ষেত্রে বাড়িতেই মৃদু লক্ষণযুক্ত রোগীকে আইসোলেশনে রাখা যায়
বাকী ১৮% ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে
শুধু মাত্র ৩% ক্ষেত্রে অবস্থা মারাত্মক হতে পারে যেখানে নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন
কোভিড-১৯ এর ছয়টি সিন্ড্রোমকে রোগী ব্যবস্থাপনার ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে মৃদু, মাঝারি, মারাত্মক এবং সংকটাপন্ন এই চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে (fig:১ fig:২)
রোগের তীব্রতা অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদানের স্থান নির্ধারণ করতে হবে
শনাক্ত এবং সন্দেহকৃত রোগীকে, অবশ্যই কার্যকর আইসোলেশন, প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন নির্দিষ্ট হাসপাতলে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।
(বাড়ীতে আইসোলেশনের নিয়ম মেনে) মৃদু রোগের ক্ষেত্রে বাড়ীতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া যায়।
ঝুঁকিপূর্ণ/ অন্যান্য জটিলতাসহ মৃদুরোগ, মাঝারী ও মারাত্মক রোগের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করতে হবে।
সংকটাপন্ন রোগীকে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নিতে হবে।
সাধারণ ব্যবস্থাপনা
পূর্ণ বিশ্রাম- বিছানায় পূর্ণ বিশ্রাম এবং সেরে ওঠার জন্য সেবা প্রদান
যথাযথ ক্যালরি গ্রহণ নিশ্চিত করা
শরীরে পানি ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য পর্যবেক্ষণ
প্রাণ ধারণে অত্যাবশ্যকীয় চিহ্ন ও অক্সিজেন স্যাচুরেশন পর্যবেক্ষণ
সময়মত ও যথাযথভাবে প্রথমে ধীরগতিতে শুরু করে অক্সিজেনের প্রবাহ নিশ্চিত করা, নাকের ক্যাথিটার ও মাস্কের ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে নাক দিয়ে উচ্চ প্রবাহের অক্সিজেন প্রদান
সংকটাপন্ন রোগীকে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নিতে হবে।
ফলো-আপ
শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, কফসহ বা কফ ছাড়া স্থায়ী কাশি বা আরও অবনতি ঘটা, কাশির সাথে রক্ত আসা- ইত্যাদির দিকে নজর রাখতে হবে।
রোগীর কখন দ্রুত হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা প্রয়োজন?
শ্বাসকষ্ট হলে
জ্বর ও কাশির অবনতি ঘটলে
মানসিক অবস্থার হেরফের হলে
প্রচন্ড অবসাদ দেখা দিলে
হাসপাতালে ভর্তির শর্তাবলী
সন্দেহকৃত বা শনাক্ত সকল কোভিড-১৯ রোগী।
মৃদু রোগ সাথে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি (ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা যেমন এজমা/ সিওপিডি/ আইএলডি কিডনি বা লিভারের রোগে আক্রান্ত, ক্যান্সার, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী স্থূলকায় ব্যক্তি (বিএমআই>২৫) এবং বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে অবস্থার অবনতি ঘটছে এমন সকল রোগী
মাঝারী রোগাক্রান্ত- যাদের ক্লিনিক্যাল ও রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষায় নিউমোনিয়ার চিহ্ন আছে সাথে সিআরবি ৬৫ এর স্কোর ১ বা তার বেশী।
মারাত্মক নিউমোনিয়া
এআরডিএস সেপসিস সেপটিক শক
হাইপোক্সিয়া
হাসপাতাল থেকে ছাড় পাবার শর্তাবলী
১। জ্বর কমানোর কোনরকম ওষুধ (যেমন প্যারাসিটামল) ছাড়াই কমপক্ষে ৩ দিন জ্বর না আসা
২। তিন দিন যাবত শ্বাস প্রশ্বাসজনিত লক্ষণগুলোর উল্লেখযোগ্য উন্নতি (যেমন, কাশি, শ্বাসকষ্ট)
৩। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে ছুটির পরে, উপসর্গের শুরুর দিন থেকে আরম্ভ করে ২১তম দিন পর্যন্ত বাড়িতে বা সুবিধাসম্পন্ন স্থানে রোগীকে আইসোলেশনে রাখতে হবে
৪। গুরুতর বা সংকটাপন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে - চিকিৎসকের বিচক্ষণতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে
সেরে ওঠার পরে ওষুধ
যদি রোগীদের হালকা কাশি, ক্ষুধামন্দা, জিভের ওপর আস্তরণ ইত্যাদি থাকে তবে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা যেতে পারে
ফুসফুসে একাধিক ক্ষত থাকা রোগীদের হাসপাতাল থেকে ছুটির পরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা নেগাটিভ হওয়ার পরে প্রথম ৩ দিনের মধ্যে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে
ফলো আপ
প্রতিটি অব্যাহতিপ্রাপ্ত রোগীর ফলো-আপের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থা করা উচিত। প্রথম ফলোআপটি হাসপাতাল থেকে ছুটির ৪৮ ঘন্টার মধ্যে করা উচিত। তারপর ১ সপ্তাহ, ২ সপ্তাহ এবং ১ মাস পরে বহির্বিভাগে রোগীদের ফলোআপ করতে হবে। রোগীর অবস্থা ফলোআপ ফোন কলগুলি পরবর্তী ৩ এবং ৬ মাস পরে করা উচিত।
বাড়ীতে আইসোলেশনঃ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র নির্দেশনা অনুযায়ী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহকৃত রোগীদের পৃথকীকরণ, চিকিৎসা ও মনিটরিং হাসপাতালে হওয়া উচিৎ। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে, যেমন- হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা যদি অপ্রতুল হয় অথবা রোগী যদি হাসপাতালে থাকতে রাজী না হয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ সকল রোগীদের বাড়ীতে স্বাস্থ্য সেবা/ পরিচর্যার বিষযটি বিবেচনা করা যেতে পারে।
রোগীদের জন্য নির্দেশনা
আপনার উপসর্গগুলো সতর্কতার সাথে খেয়াল করুন
জ্বর থাকলে নিয়মিত তাপমাত্রা পরিমাপ করুন।
যদি নতুন উপসর্গ দেখা দেয় বা আগের উপসর্গের অবনতি হয় (যেমন-শ^াসকষ্ট দেখা দেয়), তবে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
যদি নতুন উপসর্গ দেখা দেয় বা আগের উপসর্গের অবনতি হয়
চিকিৎসকের/স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর কাছে যাওয়ার পূর্বে তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করুন এবং আপনি যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগী তা জানান। আপনি পূর্বেই জানালে অন্য সুস্থ ব্যক্তিরা যেন আক্রান্ত না হয়/ সংস্পর্শে না আসে -এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পক্ষে সাবধানতা অবলম্বন করা সম্ভব হবে।
ভ্রমণের সময় এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রবেশের পূর্বে মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন।
গণপরিবহন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং সম্ভব হলে এ্যাম্বুলেন্স / নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাবেন এবং যাত্রাকালীন সময়ে পরিবহনের জানালা খোলা রাখুন।
সর্বদা শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি (বিশেষ করে- কাশি শিষ্টাচার) মেনে চলুন, হাত উপরের নিয়মে পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং চলাচলের সময় ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবস্থানকালে অন্যদের থেকে ১ মিটার (৩ ফিট) দূরত্ব বজায় রাখুন।
শ্বাসতন্ত্র / অন্য কোন প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি) কারণে যদি যানবাহনের কোন অংশ নোংরা হয়, তবে উপরের বর্ণিত নিয়মানুযায়ী জীবাণুমুক্ত করুন।
চিকিৎসা সেবা নেয়া ব্যতীত নিজ বাড়ীতে থাকুন
হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেয়া ব্যতীত বাড়ীর বাইরে যাবেন না।
বাড়ীর বাইরে কাজে, স্কুল, কলেজ অথবা জনসমাগমে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
গণপরিবহন ব্যবহার, অন্যদের সাথে একই যানবাহন অথবা ট্যাক্সি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
বাড়ীর অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকুন
আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্ন আলাদা ঘরে থাকুন এবং অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদাভাবে থাকুন। তা সম্ভব না হলে, অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার (৩ ফুট) দুরে থাকুন (ঘুমানোর জন্য পৃথক বিছানা ব্যবহার করুন)।
যদি সম্ভব হয় তাহলে আলাদা গোসলখানা এবং টয়লেট ব্যবহার করুন। সম্ভব না হলে, অন্যদের সাথে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমান ও ঐ স্থানগুলোতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করুন।
বুকের দুধ খাওয়ান এমন মা বুকের দুধ খাওয়াবেন। শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন এবং ভালভাবে হাত ধুয়ে নিন।
মাস্ক ব্যবহার করুন
জনসমাগমে (ঘরে অথবা যানবাহনে) এবং কোন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে প্রবেশ করার পূর্বে মাস্ক ব্যবহার করুন।
রোগীর মুখে মাস্ক পরা সম্ভব না হলে (যদি মাস্কের কারণে শ^াসকষ্ট হয়) বাড়ীর অন্যান্য সদস্যরা রোগীর ঘরে প্রবেশের পূর্বে মুখে মাস্ক পরবেন।
মাস্ক পরে থাকাকালীন এটি হাত দিয়ে ধরা থেকে বিরত থাকুন।
মাস্ক ব্যবহারের সময় প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি) সংস্পর্শে আসলে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে ফেলুন এবং নতুন মাস্ক ব্যবহার করুন।
মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন এবং সাবান পানি দিয়ে ভালভাবে হাত ধুয়ে নিন।
হাত ধোয়া
হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে অথবা সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুবেন (বিশেষ করে যদি হাত দেখতে নোংরা লাগে সাবান-পানি ব্যবহার করুন)।
অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না।
সাবান-পানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত শুকনো করে ফেলুন। টিস্যু না থাকলে শুধু হাত মোছার জন্য নির্দিষ্ট তোয়ালে/ গামছা ব্যবহার করুন এবং ভিজে গেলে বদলে ফেলুন।
মুখ ঢেকে হাঁচি কাশি দিন
হাঁচি কাশির সময় টিস্যু পেপার/ মেডিকেল মাস্ক/ কাপড়ের মাস্ক/ বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন এবং উপরের নিয়মানুযায়ী হাত পরিষ্কার করুন।
টিস্যু পেপার ও মেডিকেল মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলুন
কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে কাপড় কাচা সাবান/গুড়া সাবান দিয়ে কাপড়টি পরিষ্কার করে ফেলুন।
ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না
আপনার খাওয়ার তৈজসপত্র- থালা, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না ।
এ সকল জিনিসপত্র ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।
কখন আপনার আইসোলেশন শেষ হবে?
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগী/ রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি ততদিন পর্যন্ত বাড়ীতে আইসোলেশনে থাকবেন যতদিন তাদের থেকে অন্যদের সংক্রমণের (২য় পর্যায়ের সংক্রমণ) সম্ভাবনা কমে না যায়।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার আইসোলেশন শেষ হবে। চিকিৎসকের সিদ্ধান্তমতে একজন হতে অন্যজনের আইসোলেশন-এর সময়সীমা আলাদা হতে পারে। তবে, এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ সময়সীমা ১৪ দিন।
আপনি আইসোলেশনে থাকাকালীন যা করতে পারেন-
কোভিড-১৯ সম্পর্কে জানতে পারেন। ডঐঙ, ঈউঈ, ওঊউঈজ এর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পেতে পারেন।
পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে ফোন/মোবাইল/ ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখুন।
শিশুকে তার জন্য প্রযোজ্যভাবে বুঝান। তাদেরকে পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রী দিন এবং খেলনাগুলো পরে জীবাণুমুক্ত করুন।
আপনার দৈনন্দিন রুটিন, যেমন- খাওয়া, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি মেনে চলুন।
সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করতে থাকুন।
মনকে প্রশান্ত করে এমন কাজ করুন। এই সময়কে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান, সাধারণত যা করার অবসর হয় না- বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা অথবা উপর্যুক্ত নিয়মগুলোর সাথে পরিপন্থী নয় এমন যে কোন বিনোদনমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করুন বা ব্যস্ত রাখুন।
পরিচর্যাকারীদের জন্য নির্দেশাবলী
বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং যার উপরে উল্লিখিত রোগসমূহ নেই, এমন একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত হওয়া উচিৎ।
সন্দেহজনক রোগীর সাথে কোন অতিথিকে দেখা করতে দিবেন না।
পরিচর্যাকারী নিম্নলিখিত যে কোন কাজ করার পর প্রতিবার উপরের নিয়মে দুই হাত পরিষ্কার করবেন-
রোগীর সংস্পর্শে এলে বা তার ঘরে ঢুকলে
খাবার তৈরীর আগে ও পরে
খাবার আগে
টয়লেট ব্যবহারের পরে
গ্লাভস পরার আগে ও খোলার পরে
যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হয়
রোগী পরিচর্যার সময় এবং রোগীর মল-মূত্র বা অন্য আবর্জনা পরিষ্কারের সময় একবার ব্যবহারযোগ্য (ডিসপোজেবল) মেডিকেল মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করুন। খালি হাতে রোগী বা ঐ ঘরের কোন কিছু স্পর্শ করবেন না।
রোগীর ব্যবহৃত বা রোগীর পরিচর্যায় ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যু ইত্যাদি অথবা অন্য আবর্জনা রোগীর রুমে রাখা ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে রাখুন। আবর্জনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলুন।
ঘরের মেঝে, আসবাবপত্রের সকল পৃষ্ঠতল, টয়লেট ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করুন। পরিষ্কারের জন্য ১ লিটার পানির মধ্যে ২০ গ্রাম (২ টেবিল চামচ পরিমাণ) ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে দ্রবণ তৈরী করুন ও ঐ দ্রবণ দিয়ে উক্ত সকল স্থান ভালোভাবে মুছে ফেলুন। তৈরীকৃত দ্রবণ সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।
রোগীর কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি ব্যবহৃত কাপড় গুড়া সাবান/ কাপড় কাচা সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন এবং পরে ভালোভাবে শুকিয়ে ফেলুন।
নোংরা কাপড় একটি লন্ড্রি ব্যাগে আলাদা রাখুন। মল-মূত্র বা নোংরা লাগা কাপড় ঝাঁকাবেন না এবং নিজের শরীর বা কাপড়ে যেন না লাগে তা খেয়াল করুন।
রোগীর ঘর/টয়লেট/বাথরুম/কাপড় ইত্যাদি পরিষ্কারের পূর্বে একবার ব্যবহারযোগ্য (ডিসপোজেবল) গ্লাভস ও প্লাস্টিক এপ্রোন পরে নিন এবং এ সকল কাজ শেষে উপরের নিয়মে দুই হাত পরিষ্কার করুন।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিশেষ বিবেচ্য
১. যেসব মায়েদের কোভিড-১৯ সন্দেহ করা হচ্ছে বা নিশ্চিত হয়েছে তাদের পূর্বে উল্লেখিত উপায়ে চিকিৎসা দিতে হবে, পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় তাদের শারীরিক সহনক্ষমতাও বিবেচনায় রাখতে হবে।
২. ধাত্রীবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ও নৈতিকতা বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে মা ও গর্ভস্থ শিশুর জন্য কল্যাণকর হয় এমনভাবে ঝুঁকি-উপকারিতা বিশ্লেষণ করে নতুন গবেষণালব্ধ ওষুধ ব্যবহার করা উচিত। তবে এ ওষুধ গবেষণা চলাকালীন ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
৩. জরুরী প্রসব বা গর্ভাবস্থার অবসান ঘটানো- এগুলো খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত যা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। যেমন, গর্ভাবস্থার মেয়াদ, মায়ের অবস্থা, গর্ভস্থ সন্তানের স্থিতিশীলতা ইত্যাদি। ধাত্রীবিদ্যা, নবজাতক ও নিবিড় পরিচর্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে নেয়া খুবই জরুরী।
কোভিড -১৯ আক্রান্ত শিশু এবং মায়েদের যত্ন: আইপিসি এবং বুকের দুধ খাওয়ানো বিষয়ে (ডিজিএইচএস ওয়েবসাইটে পেডিয়াট্রিক্স এবং ওজিএসবি গাইডলাইন দেখুন)