অধ্যাপক মামুনার রশীদ
এই সংখ্যায় জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বেশ কয়টি প্রবন্ধ রয়েছে। প্রথমটি ডেঙ্গুর উপর, যেটি গোটা ২০২৩ সাল জুড়েই দেশে একটি ভয়ঙ্কর ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করেছিল। ডেঙ্গু সংক্রমণ এবং মৃত্যু উভয়ই সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। এই রেকর্ডগুলি শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি হওয়া রোগীদের উপর। ধারণা করা যেতেই পারে যে, কমিউনিটিতে বিপুল সংখ্যক রোগী বাদ পড়ে যাচ্ছে এবং বাস্তব পরিস্থিতি যা দেখা যায় তার চেয়ে অনেক খারাপ। এন.বি.পি.এইচ. এর এই ইস্যুতে দেশে ডেঙ্গুর বিরাজমান পরিসংখ্যানের হালনাগাদ উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারী নির্দেশিকা থেকে সহজ রেফারেন্সের জন্য প্রাসঙ্গিক অংশগুলিকে সামনে আনা হয়েছে। মূল কথা হল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে এমন সকল সেক্টরের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে যাওয়া।
দেশের অভ্যন্তরে মোবাইল/সেল ফোনের সহজলভ্যতা সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরিপ পরিচালনা করতে সম্ভব করেছে। এই ধরনের সমীক্ষা প্রণয়নের পটভূমি এবং উদ্দেশ্যগুলি একটি সংক্ষিপ্ত আর্টিকেলে বর্ণিত হয়েছে। এটি আইইডিসিআর—এ পরিচালিত হয়েছে এবং অসংক্রামক রোগের (এনসিডি) ঝুঁকির কারণগুলি বিবেচনায় নিয়ে এই ধরনের সমীক্ষার কার্যকারিতা এবং অন্য পদ্ধতির সাথে তুলনা করার জন্য বিকল্পগুলি দেখা/তুলনা করা হয়েছে।
সাধারণ ভোগ্যপণ্যে উচ্চ মাত্রার সীসার উপস্থিতি স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও জনসাধারণের মাঝে একটি ভীতির সঞ্চার করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা "পিওর আর্থ" সম্প্রতি একটি র্যাপিড মার্কেট স্ক্রীনিং এর ফল প্রকাশ করেছে। বিশ্বের বাজারে বিক্রি হওয়া সীসা দ্বারা দূষিত সাধারণ ভোগ্যপণ্য শনাক্ত করতে আরএমএস সমীক্ষা পরিচালনাকারী ২৫টি দেশের মধ্যে একটি সমীক্ষা হয়েছে যেখানে বাংলাদেশও রয়েছে। এই প্রবন্ধে এটি আলোচনা করা হয়েছে।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও “ওয়ান হেল্থ” গতি পেয়েছে। 'ওয়ান হেলথ বাংলাদেশ' এবং 'ওয়ান হেলথ সেক্রেটারিয়েট' যৌথভাবে ৫ই নভেম্বর ২০২৩-এ “ওয়ান হেল্থ” দিবস উদযাপন করেছে। এটি স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে বিস্তৃত জটিল চ্যালেঞ্জগুলি সমাধানের জন্য “ওয়ান হেল্থ”এর সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে পেশাদার, শিক্ষাবিদ, সরকার এবং উন্নয়ন অংশীদারদের জড়িত করে। এই বিষয়ে একটি ধারণা নোট এই সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটি জনস্বাস্থ্যের একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া রোগীদের জনমিতির তথ্যের একটি বিশ্লেষণ এই সংখ্যায় উপস্থাপন করা হয়েছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত এই সকল রোগীদের জন্য দেশব্যাপী দ্রুত একটি "ক্যান্সার রেজিস্ট্রি" প্রণয়ন করার প্রয়োজন এবং এই নিবন্ধে কিছু পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
আশা করা হচ্ছে, এই সংখ্যার প্রতিটি প্রবন্ধ স্বাস্থ্যকর্মকর্তা—কর্মচারী ও জনসাধারণের কাছে উপভোগ্য ও আগ্রহের বিষয় হিসেবে বিবেচিত হবে।