এনবিপিএইচ গ্লোবাল ডেস্ক
ইবোলা কি এবং কিভাবে ছড়ায়?
ইবোলা একটি ভয়াবহ জীবননাশী রোগ যেখানে মৃত্যুহার গড়ে ৫০% (২৫-৯০%)। ১৯৭৬ সালে এই ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হবার পর থেকে আফ্রিকার দেশগুলোতে নিয়মিত বিরতিতে এর প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গেছে। নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা বা প্রতিষেধক না থাকা এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকায় যখনই পৃথিবীর কোন একটি জায়গায় এই রোগ দেখা দেয়, তখন তা মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরি করে।
মানুষের মাঝে প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ ছড়িয়েছিল সংক্রমিত অন্য পশু (অসুস্থ বা মৃত) যেমন শিম্পাঞ্জি, গরিলা, ফলখেকো বাদুড়, জংলী হরিণ, বা শজারুর দেহরস থেকে বা কাঁচা মাংস খাওয়ার ফলে। পরবর্তীতে এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে শুরু করে রক্ত বা অন্যান্য দেহরস (বীর্য, অশ্রু, মস্তিষ্ক ও ¯œায়ুর চারপাশের তরল এবং রক্তরস)-এর সরাসরি সংস্পর্শে কিংবা ব্যবহৃত জিনিষপত্র যেমন বিছানা বা কাপড় যেখানে এই রস লেগে গেছে কিংবা দেহের কাটা অংশে স্পর্শের মাধ্যমে। স্বাস্থ্যসেবায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন যখন কোন ইবোলা রোগীর দেখাশোনা করেন।
চিকিৎসা ও প্রতিষেধক
প্রচুর পানি পান করে বা শিরাপথে গ্রহণ করে পানিশূন্যতা কাটিয়ে ওঠা এবং উপসর্গগুলোর প্রশমন করাই এর মূল চিকিৎসা। এছাড়া এখন পর্যন্ত ইবোলার কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তারপরেও কিছু ওষুধ, রোগ প্রতিরোধক ও রক্ত পরিশোধক ব্যবস্থা এর চিকিৎসা ক্ষেত্রে উল্লেখিত আছে।
গিনিতে পরীক্ষামূলকভাবে ইবোলার প্রতিষেধক টিকা ব্যপকভাবে কার্যকর হয়েছে। এর নাম ‘আরভিএসভি-যেবভ’। ২০১৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গিনির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মেডিসিন স্যন ফ্রন্টিয়ারস এবং নরওয়ের জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, আরো কিছু আন্তর্জাতিক সহযোগী নিয়ে যৌথভাবে ১১৮৪১ জন রোগীর ওপর এর ট্রায়াল দেয়।
স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ
রোগ নির্ণয়ে যাই আসুক, স্বাস্থ্যকর্মীদের অবশ্যই সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত, যার মধ্যে রয়েছে হাত ধোয়া, নাকমুখ ঢেকে রাখা, ব্যক্তিগত রোগ-প্রতিরোধক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা, নিরাপদ ইঞ্জেকশন দেবার চর্চা রাখা এবং নিরাপদে শব কবর দেয়া।
ইবোলা রোগীর ১ মিটার দূরত্বের মধ্যে থেকে যেসব স্বাস্থ্যসেবীকে কাজ করতে হবে তাদের অবশ্যই ফেস শিল্ড (মুখ ঢেকে রাখার বিশেষ পরিচ্ছদ) এবং পরিস্কার দস্তানা পরে নিতে হবে।
গবেষণাগারের কর্মীরাও ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। ইবোলায় অসুস্থ মানুষ কিংবা অন্য পশুর নমুনা নিয়ে কাজ করার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী এবং উপযুক্ত যন্ত্রাদি সম্বলিত গবেষণাগার ব্যবহার করা জরুরি।