অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন, ডা. আহমেদ নওশের আলম, ডা. এএসএম আলমগীর, আইইডিসিআর
ক. বিশ্ব পরিস্থিতি
ডেঙ্গু আক্রমণ তীব্রহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ৫০ বছর ধরে যা প্রায় ৩০ গুণ বেড়েছে। ইউএস-সিডিসি-এর তথ্যমতে বিশ্বে প্রায় ৪০% লোক ডেঙ্গু রোগের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাস করে। এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, আমেরিকা, আফ্রিকা ও ক্যারীবীয় অঞ্চলের প্রায় ১০০টি দেশে এ রোগ মহামারী আকারে ছড়াচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে প্রতি বছর ৫ থেকে ১০ কোটি লোক এই রোগে আক্রান্ত হয় যার মাঝে ৫ লক্ষ হেমোরেজিক জ্বরে ভোগে আর ২২০০০ মৃত্যুবরণ করে (অধিকাংশই শিশু)।
খ. বাংলাদেশে ডেঙ্গুর চিত্র
১৯৬৫ সালে প্রথম ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় যা ‘ঢাকা জ্বর’ নামে নথিভুক্ত আছে। পরবর্তীতে ১৯৭৭-৭৮ এ বিক্ষিপ্তভাবে কিছু জ্বরের খবর পাওয়া যায়। ১৯৯৬-৯৭ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ২৫৫ জন জ্বরের রোগী পরীক্ষা করে ১৩.৭%-এর মধ্যে ডেঙ্গু শনাক্ত করা হয়।
২০০০ সালে বাংলাদেশ ডেঙ্গু ও ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরের বড় রকম প্রাদুর্ভাবে পড়ে, তারপর থেকেই এটি বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে মহামারী আকারে দেখা দিচ্ছে। ২০০০ সালের প্রাদুর্ভাবের সময় ডিইএনভি-৩ এর প্রাধান্যসহ ৪ ধরনের সেরোটাইপের সংক্রমণই লক্ষ্য করা গেছে যা ২০০২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। পরবর্তী বছরগুলোতে অবশ্য ডিইএনভি-১ ও ডিইএনভি-২ এর উপস্থিতিই লক্ষ্য করা গেছে। ডিইএনভি-৩ এর পুনরাবির্ভাব দেখা যায় গত বছর। ২০১৮-তে উল্লেখযোগ্য হারে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে যা বিগত ১৫ বছরের তুলনায় আশঙ্কাজনক। উপরন্তু আইইডিসিআর-এর অপ্রকাশিত তথ্যমতে এ বছর দুই বা ততোধিক সেরোটাইপের সহসংক্রমণ বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ১ম ও ২য় গ্রাফচিত্রে গত কয়েক বছরে ডেঙ্গু আক্রমণের হার এবং মৃত্যুহারের পরিসংখ্যান দেয়া হলো।