অধ্যাপক মামুনার রশীদ
এনবিপিএইচ-এর এই সংখ্যায় জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চারটি নিবন্ধ রয়েছে এবং আরেকটি আইইডিসিআর-এর একটি বিভাগের ইতিহাস ও কার্যক্রমের ওপর রয়েছে। আশা করি আমরা আমাদের আগামী সংখ্যাগুলিতে আইইডিসিআরের অন্যান্য বিভাগের পরিচিতি সম্মন্ধে নিবন্ধন দেখব এবং তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে পরিচিত হব। এই ইস্যুতে কীটতত্ত¡ বিভাগের একটি পরিচিতি পাচ্ছি, যেটি তার নিজস্ব যোগ্যতায় আইইডিসিআর-এর সূচনা এবং ইতিহাসেরই একটি অংশ।
বিভিন্ন রোগের বিষয়ে আমরা প্রতিনিয়ত অপ্রয়োজনীয় ভীতি ও আতঙ্কের সম্মুখীন হচ্ছি যা সাধারণত অতি উৎসাহী প্রেস এবং মিডিয়া দ্বারা প্রচার করা হয়। সাম্প্রতিক অতীতে, আমরা বিভিন্ন দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার খবর পেয়েছি। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে একাধিক দাবি করা হয়েছিল। আইইডিসিআর জনসাধারণের মনের ভয় দূর করতে এবং সঠিক রিপোর্ট করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের আরও ইতিবাচক ভূমিকা পালন এবং শুধুমাত্র প্রকৃত উৎসের উপর নির্ভর করা উচিত। মাঙ্কিপক্সের একটি সাম্প্রতিক আপডেট এই ইস্যুতে আলোচনা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই রোগের নামকে ঘিরে বর্ণবাদী এবং কলঙ্কজনক ভাষার প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে যে মাঙ্কিপক্স এখন ‘এম পক্স’ নামে পরিচিত হবে। যাইহোক, "মাঙ্কিপক্স" নামটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত উভয় নামই এক বছরের জন্য একই সাথে ব্যবহার করা হবে।
'লকডাউন'-এর ভূমিকা, যদিও মহামারী নিয়ন্ত্রণের জন্য গৃহীত বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের মধ্যে একটি, দীর্ঘমেয়াদে এটিকে আত্মঘাতি হিসাবে সমালোচিত হয়েছে। একটি নিবন্ধে করোনা-১৯ মহামারীর প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশে লকডাউনের কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের এফইটিপি’বি ছাত্রদের একটি নিবন্ধনে, সস্তা কিন্তু মারাত্মক পাফার/পটকা মাছ খাওয়ার কারণে রিপোর্ট করা মৃত্যু এবং ভোগান্তির বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই মাছটি বাংলাদেশে, বিশেষ করে যে সকল দরিদ্র জনগোষ্টি এটি খেয়ে থাকে, তাদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরো দুঃক্ষজনক এই কারণে যে এই রোগের এখনও কোন নিরাময় বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেই।
অনেক বছর ধরেই বাংলাদেশের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি একটি অত্যন্ত সফল কর্মসূচি হিসেবে স্বীকৃত। এর ফলশ্রুতিতে ভ্যাকসিন প্রতিরোধযোগ্য অনেকগুলি রোগ সংঘটিত হওয়া এখন একটি বিরল ঘটনায় পরিণত হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, প্রতিবেশী রাষ্ট্র মায়ানমার থেকে ১০ লক্ষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আগমন নতুন করে ডিপথেরিয়া রোগের সমস্যা হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে আইইডিসিআর-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে রোগটি মোকাবেলা করার সার্বিক সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। এর ফলে, বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েকটি ডিপথেরিয়ার কেস রিপোর্ট করা হয়, যার মধ্যে একটি এনবিপিএইচ-এর এই ইস্যুতে আলোচনা করা হয়েছে। উল্লেখ্য বিষয় হল, বিস্তারিত অনুসন্ধানের পর এটি একটি 'ফলস অ্যালার্ম' হিসাবে প্রমাণিত হয়, তবে অনুসরণ করা পদ্ধতিগুলি জনস্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য একটি শিক্ষনীয় বিষয় হতে পারে।